এক্সক্লুসিভজাতীয়সারাদেশ

পালিয়ে বিয়ের পাঁচ বছর পর সন্তান নিয়ে বরযাত্রী

পালিয়ে বিয়ের পাঁচ বছর পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে নেওয়ায় ফের বরযাত্রী নিয়ে শ্বশুরালয়ে গেলেন যুবক। আর সেই বরযাত্রীদের মধ্যমণি হয়ে ছিল তারই ৪ বছরের ছেলে মো. সামি মাতুব্বর।

বরযাত্রায় বাবা আর সন্তানের সাজও ছিল এক। সঙ্গে ছিল ১৬৩ জন বরযাত্রী।

গত ০৮ ফেব্রুয়ারি অভিনব এ ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামে।

সেই বরযাত্রীর ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

জানা গেছে, পরিবারের মত না থাকায় প্রিয়তমা খাদিজা আক্তার সেতুকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন মো. এনায়েত হোসাইন (৩০)।

এনায়েত ফরিদপুরের সালথার আটঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মোতালেব মাতুব্বরের ছেলে।

আর তার সহধর্মিণীর বাড়িও একই গ্রামে। গ্রামটির কুদ্দুস মাতুব্বরের মেয়ে তিনি। বিয়ের সময় পার্শ্ববর্তী সাড়ুকদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
বিয়ের পাঁচ বছর পর হলো গায়ে হলুদ

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে সালথার আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শহিদুল হাসান খান সোহাগ জানান, বিয়েটা হয়ে গেলেও মেনে নেয়নি শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এ যুগলের কোলজুড়ে আসে সন্তান মো. সামি। তবুও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ক্ষোভের বরফ গলেনি। উল্টো স্ত্রীর পরিবারের করা মামলায় ২০২২ সালে ২৫ দিন জেলও খাটতে হয় এনায়েতকে। পরে জামিন পান তিনি।

এর মাঝে ফরিদপুর শহরে ‘নিউ লাইফ’ নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ব্যবস্থাপকের চাকরি পান এনায়েত। সাথে হাসপাতালটির মালিকানা কিনে হয়ে যান পরিচালকও।

চেয়ারম্যান সোহাগ আরও বলেন, এভাবে চলার পাঁচ বছর পর আমার মধ্যস্ততায় সমাধান হয় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে। ওই বিয়ে মেনে নেয় মেয়ের পরিবার। অবশেষে উভয় পরিবারের সম্মতিতে ধুমধাম করে আয়োজন করা হয় এ দম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠানের।

বর-কনে সাজতে পেরে উচ্ছ্বসিত যুগল এনায়েত ও খাদিজা

এ ব্যাপারে জানতে মো. এনায়েতের হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আসলে অনেক কষ্টের পরে আমাদের বিয়ে মেনে নিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অনেক কষ্ট ও সাধনায় গড়া আমাদের ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় অনেক আনন্দিত আমি।

এনায়েত বলেন, আমার ইচ্ছে ছিল মানুষকে এটা প্রমাণ করে দেখাব যে, ধৈর্য ধরলে ভালোবাসার জয় একটা সময় হয়। সেটার প্রমাণ দেখাতে পেরে আমি আজ সত্যিই গর্বিত।

Comment here