আন্তর্জাতিকরোহিঙ্গা সমাচার

রোহিঙ্গাদের পালানোর পথ খোলা, ফেরার পথে মাইন

তোফায়েল আহমদ ও জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, টেকনাফ সীমান্ত থেকে   

 

 

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাত থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে এবার বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে এসে মৃত্যুফাঁদে পড়তে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। তাদের কেউ কেউ মাটির নিচে পোঁতা মাইনে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বের হওয়ার পথ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে, আর ঢোকার পথ করা হয়েছে মৃত্যুসংকুল—অন্তত প্রাথমিক বিশ্লেষণে এমনটাই সন্দেহ করা হচ্ছে। কারো কারো ধারণা, অনুপ্রবেশে ব্যর্থ হয়ে ফের মিয়ানমারে ঢুকলেই গুলি করে অথবা মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যার ঘৃণ্য নীতি নিয়েছে ওই দেশের সেনাবাহিনী। এদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের স্রোতকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের চিহ্নিত মানবপাচারকারীরা নেমেছে পাচার বাণিজ্যে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রোহিঙ্গা পাচারের ভয়াবহ চিত্র। এলাকাবাসী জানিয়েছে, পাঁচ শতাধিক মাছধরা নৌকা এখন শুধু রোহিঙ্গা পাচারের কাজেই ব্যবহৃত হচ্ছে। দিন-রাত মিয়ানমারে গিয়ে তিন থেকে চার ট্রিপ ভাড়া খাটছে একেকটি ট্রলার। প্রতি ট্রিপে তিন থেকে চার লাখ টাকা আয় হচ্ছে। ট্রলারে করে রোহিঙ্গাদের এনে বিভিন্ন পয়েন্টে নামানো হচ্ছে। আগে থেকেই বাংলাদেশে থাকা স্বজনরা সেসব পয়েন্টে অবস্থান করছে এবং নবাগত রোহিঙ্গাদের জিপ, টেম্পো, অটোরিকশা ইত্যাদিতে করে গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে।

আবার যেসব রোহিঙ্গা ভাড়ার টাকা নগদ পরিশোধ করতে পারছে না তাদের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে আটকে রাখা হচ্ছে। পরে ভাড়ার টাকা পরিশোধ করে চলে যাচ্ছে। গতকাল দুপুরে উপকূলের বেশ কয়েকটি স্থানে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার ভিড়তে দেখা গেছে। তবে দক্ষিণমুখী ট্রলার ছিল বেশি। এসব ট্রলার রোহিঙ্গা পাচারের জন্য মিয়ানমার উপকূলের দিকে যাচ্ছে বলে জানায় স্থানীয়রা।‘পুশব্যাক বন্ধে মাইন’ : সোমবারের পর গতকাল মঙ্গলবার দুবার মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মিয়ানমারের ভেতরে এ বিস্ফোরণে গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টায় একজন ও সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুজন রোহিঙ্গা ক্ষত-বিক্ষত হয়। তাদের বাংলাদেশের কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের ইউএনএইচসিআর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর আগের দিন সোমবার মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা নারীর পা উপড়ে যায়। রবিবার এক দম্পতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে মিয়ানমার ভূখণ্ডে একটি বিস্ফোরণ হওয়ার শব্দ পাওয়া যায়। এর কিছুক্ষণ পরে তুমব্র সীমান্ত দিয়ে উম্মে সুলতানা (১৩) নামের ক্ষত-বিক্ষত রোহিঙ্গা কিশোরীকে কুতুপালং ইউএনএইচসিআর হাসপাতালে আনা হয়। এর আগে সকাল ১১টার দিকে মিয়ানমারের ধামনখালী থেকে আসা রহিমা খাতুন জানান, তাঁরা মিয়ানমার থেকে বিনা বাধায় বাংলাদেশে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেন। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের বাধা দেয়। তখন তাঁরা আবার মিয়ানমারের সীমান্তে ঢুকে পড়েন। এ সময়ই হঠাৎ মাটি থেকে বিস্ফোরণ হলে তাঁর দুই ছেলে ইব্রাহীম (১৬) ও মো. ইউনুস (১১) ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। তখন তাদের নিয়ে রহিমা বাংলাদেশে চলে আসেন। কুতুপালং ক্যাম্প হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।

সোমবার সীমান্তের অদূরে মিয়ানমারের ভেতর বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা নারীর পা উড়ে যায়। তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রবিবার মিয়ানমার সীমান্তে ঢেকুবনিয়ার দারুল উল্লাহ (৩০) ও তাঁর স্ত্রী আয়েশা বেগম (২১) গুলি করা হলে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। অনুপ্রবেশ নানা পথ দিয়ে চললেও সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্ট দিয়ে পুশব্যাক করা হয়ে থাকে রোহিঙ্গাদের। বাংলাদেশ থেকে পুশব্যাক যাতে কঠিন হয়ে পড়ে সেই লক্ষ্যেই মিয়ানমার সেনাবাহিনী মাইন পুঁতে রেখেছে বলে অনেকেই সন্দেহ করছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জরুল হাসান খান জানান, মিয়ানমার সীমান্তে বিস্ফোরণ হচ্ছে। এতে কেউ হতাহত হয়েছে কি না তা জানা নেই। তা ছাড়া এটা একান্ত মিয়ানমারের ব্যাপার। বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি সদা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

মিয়ানমারে মাইকিং : গতকাল মিয়ানমারের ঠংবাজার থেকে হোয়াইক্যকং-এর রইক্যং রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মো. আলম (৫০) জানান, মিয়ানমারে মুসলমানদের পাড়ায় পাড়ায় রোহিঙ্গাদের বাঙালি উল্লেখ করে অপ্রপ্রচার চালাানো হচ্ছে। মাইকিং করে বলা হচ্ছে—‘তোমরা বাঙালি, বাংলাদেশে চলে যাও। এটা তোমাদের দেশ নয়, এখানে তোমাদের রাখা যাবে না। বাংলাদেশে না গেলে সবাইকে এখানে মরতে হবে। ’ একই কথা বলেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত মো. জাকারিয়া, হালিমা ও হুমাইরা বেগম। তাঁরা জানান, মাইকিং করার পরপরই ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে সবাইকে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য করে। তাদের কথা না শুনলে মেরে ফেলে।

এদিকে সহিংসতার কারণে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বাড়িঘর ছেড়ে পাহাড় বা অন্যত্র অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে স্থানীয় প্রশাসন একটি উদ্যোগ নিয়েছে বলে অসমর্থিত সূত্র দাবি করেছে। মংডু এলাকার প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকা এক রোহিঙ্গা কালের কণ্ঠকে বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বুচিডং থেকে সরকারি কর্মকর্তারা ট্রলারযোগে পালিয়ে থাকা ওই সব রোহিঙ্গার আশ্রয়স্থলে গিয়ে অভয় দেওয়া শুরু করেছেন। রোহিঙ্গাদের নিজ নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়ারও আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা। হঠাৎ মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর এমন আচরণকে অনেক রোহিঙ্গাই সন্দেহের চোখে দেখছে। তাদের সন্দেহ—রোহিঙ্গাদের এক স্থানে জড়ো করে হত্যা করার পাঁয়তারাও হয়ে থাকতে পারে।

পাচার বাণিজ্য : জানা যায়, এক সময়ের মানবপাচারকারীরা এখন টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং খুরের মুখ, টেকনাফের হাজমপাড়া, মিঠাপানিরছড়া, বাহারছড়ার  নোয়াখালী, শিলখালী, শামলাপুর এলাকার বিভিন্ন ঘাট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সহায়তা করছে।   প্রকাশ্যে শত শত নৌকা উপকূল দিয়ে মিয়ানমারে যাচ্ছে, আনছে শত শত রোহিঙ্গা। কিন্তু সেই সব স্থানে নেই প্রশাসনিক নজরদারি। পুলিশ-বিজিবি বা কোস্ট গার্ড সদস্যদের তৎপরতাও চোখে পড়ছে না। এই সুযোগে রোহিঙ্গারা টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কও ব্যবহার করছে।

জানা গেছে, বাহারছড়া শামলাপুরের লম্বা জামাল চার ট্রিপ ভাড়া খেটে এক দিনেই ১৫-১৬ লাখ টাকা আয় করে।   এর পরও বাড়িতে আটকে রাখে বেশ কিছু রোহিঙ্গাকে বাকি টাকা আদায়ের জন্য। এভাবে শফিউল্লাহ মাঝি, বেলাল মাঝি, কবির, ফড়িয়া মৌ. আশরাফ আলী, শাসমুদ্দিন, আলমসহ পাঁচ শতাধিক মাঝি বা বহদ্দার এখন রোহিঙ্গা পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মিঠাপানিরছড়া এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার চাঁদনি রাতে শত শত ট্রলার মিয়ানমারে গিয়ে রোহিঙ্গা বোঝাই করে নিয়ে এসেছে।

বঙ্গোপসাগর উপকূল দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক কাঞ্চন কান্তি দাস কালের কণ্ঠকে বলেন, রোহিঙ্গা পাচারের অভিযোগে ছয়জন পাচারকারীকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গাদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযানও চালানো হয়েছে। বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, মাইকিং করা হয়েছে ট্রলারে করে রোহিঙ্গা পাচার না করতে। কিন্তু এসব কথা কাজে আসছে না। শুধু বাহারছড়া ইউনিয়নের রোহিঙ্গা বস্তি, পাড়া মহল্লা ও পাহাড়ি এলাকায় ইতিমধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গার কারণে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠছে। আইন-শৃঙ্খলার দিক থেকেও হুমকি হতে পারে এসব রোহিঙ্গা—এমন আশঙ্কা করছেন তিনি। এসব রোহিঙ্গাকে একত্র করে নজরদারির মধ্যে রাখতে ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।

 

‘দেশের জন্য অভিশাপ’ : মিয়ানমারকে মুসলিমশূন্য করতে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ কমিটি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে সহিংসতা এখন বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুপ্রবেশকারী  রোহিঙ্গাদের কারণে টেকনাফ-উখিয়ার অবস্থা এখন ভয়াবহ। বনজ সম্পদ, খেত খামার ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানীয়দের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট সব জায়গার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। দুর্গন্ধে ভারি হয়ে উঠেছে পরিবেশ। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে স্থানীয়দের তাদের বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে অনত্র চলে যেতে হবে।

মিয়ানমারে সহিংসতার ১২ দিনে দেড় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা অনুমান করছে। পাহাড় কেটে আর চাষাবাদের জমি নষ্ট করে গড়ে তোলা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের বসতি।   এতে করে বনজ সম্পদ ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

চলতি অনুপ্রবেশের স্রোত শুরু হওয়ার আগেই বাংলাদেশে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছিল। এ কারণে নানা সমস্যা আগেই তৈরি হয়েছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আলী কবির জানান, বন বিভাগের চারটি পয়েন্টের প্রায় ৪০০ একর বনভূমির ওপর গড়ে উঠেছে রোহিঙ্গাদের বসতি। এতে বনসম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে হোয়াইকং খাঞ্জরপাড়া বনভূমিতে গড়ে ওঠা ২০ হাজার রোহিঙ্গার বসতি উচ্ছেদ করে দখলমুক্ত করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা হয়নি।

উখিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে পাহাড় কেটে মহাসড়কের সঙ্গে লাগোয়া শত শত রোহিঙ্গার বসতি গড়ে উঠেছে। অনেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। এই হাজার হাজার রোহিঙ্গার জন্য নেই কোনো পায়খানা, নেই পানির ব্যবস্থা। যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের কারণে দুর্গন্ধ হয়ে উঠেছে পরিবেশ। এ ছাড়া খেত খামারেও অসংখ্য রোহিঙ্গা বসবাস করছে। স্থানীয় জনসাধারণের ঘরে ও ঘরের পাশে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে রোহিঙ্গারা বসতি করছে। এতে করে সড়ক, মহাসড়ক, হাটবাজার, পাড়া, মহল্লাসহ সবখানে দুর্গন্ধে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে টেকনাফ-উখিয়ায় বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে জানায় স্থানীয়রা।

হাসপাতালে ভর্তি : চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক নূপুর দেব জানান, মিয়ানমারের গুলিবিদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী আরো চার রোহিঙ্গা গতকাল সকালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তারা হলো মংডু এলাকার মোহাম্মদ সোলাইমানের ছেলে আবদুল গণি (৫২), হোসেন আহমদের ছেলে আরাফাত (২৫), সুলতান আহমদের ছেলে আমান উল্লাহ (২৮) ও মো. ওসমানের ছেলে আয়াত উল্লাহ (১৭)। চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম ভূইয়া এ খবর নিশ্চিত করে বলেন, আহতদের শরীরে বিভিন্ন অংশে গুলি ও জখমের চিহ্ন আছে। তারা হাসপাতালের ২৬ নম্বর অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ নিয়ে গত ১২ দিনে ৪৮ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রাম মেডিক্যালে চিকিৎসা নিতে আসে। তাদের মধ্যে গত ২৬ আগস্ট একজন এবং ৩০ আগস্ট একজন মারা যায়। আহতদের বেশির ভাগ গুলিবিদ্ধ ও বোমা বিস্ফোরণে দগ্ধ।

এদিকে বান্দরবান থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক মনিরুল ইসলাম মনু জানান, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ও তমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্যে রান্না করা খাবার নিয়ে যাওয়ার পথে জিপ উল্টে পাঁচ ত্রাণকর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল ১১টার দিকে বান্দরবান সদর উপজেলার রেইচা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত ফয়সল বিন মাহাবুব, সাইফুল ইসলাম, নুরুল আলম, মোহাম্মদ রোকন ও মোহাম্মদ আরমান বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। ফয়সল বিন মাহাবুব কালের কণ্ঠকে জানান, পরিবার এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কোরবানির গরুর মাংস এবং অন্যান্য খাবার নিয়ে তাঁরা নাইক্ষ্যংছড়ি যাচ্ছিলেন।

Comment here