রোহিঙ্গা সমাচার

এবারও ফিরলো না রোহিঙ্গারা.

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, টেকনাফ।

এবারও রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফিরে যেতে অস্বীকার করলো। সকাল হতে টেকনাফের শালবন রোহিঙ্গা ক্যাস্পে যানবাহন প্রস্তুত রাখা হলেও একজন রোহিঙ্গাও সেখানে না আসায় দুপুর সাড়ে ১২টার সময় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম আজ (বৃহস্পতিবার) রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হচ্ছে না ঘোষণা দেন।

নিজ দেশে ফেরাতে দিনক্ষণ ঠিক থাকলেও বৃহস্পতিবার কোন রোহিঙ্গা স্বদেশে ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় প্রত্যাবাসন থমকে দাড়ালো ফের।

এনিয়ে দুই দফায় পিছিয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম। এর আগে মিয়ানমারের দেয়া তালিকা অনুযায়ি কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রিত ১০৪১ পরিবারের ৩৪৫০ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাতকার শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা তাদের দেয়া শর্ত পূরণ না হলে একজনও এদেশ (বাংলাদেশ) থেকে যাবে না। এমনকি মরলে এদেশেই মরবে তারা।

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে এ সাক্ষাৎকার শুরু হয়। সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, বসতভিটাসহ সম্পদ ফেরত ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত না হলে মিয়ানমারে ফিরতে নারাজ বলে মত দিয়েছেন।

প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সরকার কর্তৃক স্বীকৃত রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের প্রতিনিধিদের কাছে সাক্ষাৎকারে এমনটি জানিয়েছেন।

সাক্ষাৎকার শেষে হলরুম থেকে বের হওয়া ২৬ নম্বর ক্যাম্পের এ-ব্লকের বাসিন্দা মুহাম্মদ রিয়াজ (৩২), রশিদ আমিন (৪৫) ও আই-ব্লকের হোসেন আহমদ (৫২) এমন তথ্য জানান।

রোহিঙ্গাদের এসব দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শালবাগানের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ (সিআইসি) মোহাম্মদ খালেদ হোসেন। সিআইসি মোহাম্মদ খালেদ হোসেন বলেন, শালবন ক্যাম্পের প্রত্যাবাসন তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। বাধা ছাড়া রোহিঙ্গারা সাক্ষাৎকার দিতে আসছেন। কিন্তু তিনি অফিসের বাহিরের সিদ্ধান্ত ছাড়াই কিছুই বলতে পারবেন না।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, তারা নিজ দেশে ফিরতে যেইসব শর্ত দিয়েছে মিয়ানমার সরকার যদি ওই শর্তগুলো মেনে নিয়ে নাগরিকত্ব দিলে তারা স্ব-ইচ্ছায় ফিরে যাবে। তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছুই করা এই মুহুর্তে সম্ভব না। তবে তিনি আরো জানান, যানবাহন প্রস্তুত রয়েছে। সাক্ষাতকারও এগিয়ে চলছে। যে কোন সময় তারা দেশে ফিরে যেতে রাজি হলেই প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে।

২২ আগস্ট দুপুরে টেকনাফ শালবাগান ২৬নং ক্যাম্পে সংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম ছাড়াও মিয়ানমার ও চীনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

চীনের প্রতিনিধি ঝেং তিয়ানঝু বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মধ্যস্থতার দায়িত্ব নিয়েছেন চীন। কেনো রোহিঙ্গা তাদের দেশে ফিরে যেতে চাচ্ছে না। মিয়ানমার সরকারের উপর কেন সন্দেহ তাদের তা দেখা দরকার বলেও মত প্রকাশ করেন ঝেং তিয়ানঝু।

এ সময় মিয়ানমারের প্রতিনিধি সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলেননি।

Comment here