ক্রাইমটেকনাফ

এবার আধা পাকা ধান কেটে নিলো সেই দুর্বৃত্তরা!!

এবার আধা পাকা ধান কেটে নিলো সেই দুর্বৃত্তরা!!

হোয়াইক্যং প্রতিনিধি :

এবার আধা পাকা ধান কেটে নিলো সেই দূর্বৃত্তরা। টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের
হোয়াইক্যং কানজর পাড়ায় গত ২৭ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী। এতে অর্ধ লক্ষাধিক টাকার
ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় ২৮ অক্টোবর শনিবার বিকেলে টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যায় হোয়াইক্যং কান্জর পাড়া এলাকায় ইমাম বোখারী মাদ্রাসার পূর্ব পাশে করাচি পাড়ায় নিজ জমিতে ধান চাষ করে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী। এই রোপিত ধান আধা পাকা অবস্থায় রয়েছে। এই ফাঁকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, একাধিক মামলার আসামি আব্দুল মান্নান, আবসার ও মিজবাহ”র নেতৃত্বে ১০/১২ দূর্বৃত্ত ২৭ অক্টোবর শুক্রবার দিবাগত রাত ৭ টার সময় দলবল অস্ত্র লাঠি নিয়ে আধা পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়। সকালে খবর পেয়ে এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী। তিনি জানান, এই চক্রটি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। একেক জনের ৫/৬ টি মামলা রয়েছে। পলাতক আসামি হিসেবে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন অপরাধ কর্ম করে থাকে।তাদের সাথে যুক্ত রয়েছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এতে ভয়- আতংকে সহজে মুখ খুলে না স্হানীয় লোকজন। ”
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুবায়ের সৈয়দ জানান, এ বিষয়ে অবগত রয়েছি। বিভিন্ন মামলায় পলাতক থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত এসব দূর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্হা নেওয়া হচ্ছে। ”
এদিকে একালায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ” হোয়াইক্যং উনছিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও নাফনদীর লাল দ্বীপের স্ব-শস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান নবী হোসেন গ্রুপের সাথে সংঘবদ্ধ গ্রুপ তৈরি করেছে স্হানীয় কান্জরপাড়ার আবসার-মিজবাহ বাহিনী। এই বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছে কুতুবদিয়া পাড়ার আব্দুল মান্নান, নেজাম উদ্দিন, মোঃ জুবাইর, বেলাল উদ্দিন, মিজান উদ্দিন, রবিউল হাসান, মোজাহেদুল ইসলাম , করাচি পাড়ার গিয়াস উদ্দিন, কবির আহমদ। এরা মানুষ জিম্মি করে টাকা আদায়, অস্ত্রসহ পাহারা দিয়ে মাদক পাচার, অপহরণ ইত্যাদি অপকর্মে লিপ্ত থাকে। এর আগেও চলতি বছর গত ২ এপ্রিল অটোরিকশা আটকে রেখে ২ লাখ টাকা দাবী করে বসে এই দূর্বৃত্তরা।
এ বিষয়ে ঘটনার পরের দিন (৩ এপ্রিল) টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কুতুবদিয়া পাড়ার মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী অটোরিকশা মালিক রেহেনা বেগম।
তিনি অভিযোগ করে বলেন,”টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কুতুবদিয়া পাড়ার আব্দুর রহিমের দু’ছেলে আবছার(২৭) ও কফিল উদ্দিন(৩২), একই গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে হোছন আহমদ(৩০), হ্নীলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড পানখালী গ্রামের মনির আহমদের ছেলে জয়নাল(৩২)সহ আরো ২/৩ জন ২ এপ্রিল রাত ৭টার দিকে কুতুবদিয়া পাড়া এলাকায় রাস্তার উপর দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উঁৎপেতে থাকে। এই অবস্থায় আমার ছেলের চালিত অটোরিকশাটি (সিএনজি) পথরোধ করে মোহাম্মদ মিজানুর রহমান (১৯)কে কানজর পাড়া যাওয়ার জন্য বলে। আমার ছেলে তাদের অবস্থা দেখে ভাড়া না যাওয়ার জন্য অনিহা প্রকাশ করে। কিন্তু ভয়ভীতি প্রদান করায় এক পর্যায়ে আমার ছেলে বাধ্য হয়ে তাদের নিয়ে কানজর পাড়া এলাকায় যায়। এরপর তারা আমার ছেলেকে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার একপাশে নিয়া যায় এবং সিএনজি গাড়ি ও চাবি কেড়ে নিয়ে আমার ছেলেকে ছেড়ে দেয়।”
অটোরিকশা মালিক রেহেনা বেগম আরো জানান, “অটোরিকশাটি উদ্ধার করার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমার নিকট থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ বিষয়ে কাউকে কোন ধরনের কিছু বললে পরবর্তী সময়ে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদেরকে প্রাণ নাশ করে লাশ গুম করবে মর্মে হুমকি দেয়।”
পরবর্তীতে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় অটোরিকশাটি উদ্ধার ও অপরাধের সাথে জড়িতদের আটক করা হয়।
এভাবে এই অপরাধ চক্রটি কুতুবদিয়া পাড়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

Comment here