আন্তর্জাতিকসারাদেশ

নির্বাচন হলেও চক্রান্ত শেষ হয়নি: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ:
নির্বাচন হলেও চক্রান্ত শেষ হয়নি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখনো শুনি তারা (বিএনপি) লাফালাফি করে। নির্বাচন বাতিল করতে হবে, এই করতে হবে, সেই করতে হবে। যাই হোক জনগণের ভোটে আমরা সরকারে এসেছি, জনগণের কল্যাণেই কাজ করে যাবো। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

গতকাল গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্বের ২৯টি দেশে বসবাস করা প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি পরাজয়ের ভয়ে ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়নি। জনগণের কাছে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে ক্ষমতায় আসার অন্ধকার গলি খুঁজছে দলটি। তারা জানে জনগণ তাদের বর্জন করেছে। এ কারণেই তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না।

তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজছে। তারা এখন নির্বাচনে আলোর পথ এড়িয়ে অন্ধকারের গলির দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি বলেন, ৭ই জানুয়ারির যে নির্বাচন, সে নির্বাচনে জনগণের ভোটের অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি। আমি বলবো- এটা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, যেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তো নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। হ্যাঁ নৌকা মার্কা দিয়েছি, সেই সঙ্গে বলেছি যারা নির্বাচন করতে চায় করতে পারবে। উন্মুক্ত করে দিয়েছি, কাজেই সেখানে নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে মাত্র ৩০টা সিট পাওয়ার পর থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট আর নির্বাচন চায় না। তখন থেকে তারা অগ্নিসংযোগ, রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মারার মতো অমানবিক কাজ শুরু করে। যতবেশি তারা এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাস করছে জনগণ দ্বারা ততবেশি প্রত্যাখ্যাত হওয়া শুরু করে। তাই তারা নির্বাচন করে না। নির্বাচন নষ্ট করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায় সেই পথ খুঁজে বেড়ায়। অন্ধকার গলির পথ তারা খুঁজে বেড়ায়। আলো জ্বলমল নির্বাচন আর জনগণের পথে তারা পথ হারিয়ে ফেলে।

তিনি বলেন, ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। যখন বিএনপি নির্বাচনে আসলো না, আর কেউ যেন ভোট না দেয় সে জন্য লিফলেট বিতরণ শুরু করলো তখন ঘটনা উল্টো হয়ে গেল। এতে মানুষ আরও উৎসাহিত হলো যে, আমাদের ভোট দিতেই হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আপনারা জানেন যে, এবারের নির্বাচন কমিশন আইনের মাধ্যমে করা। নির্বাচনকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা ছিল। যার কারণে নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেক সংস্কার আমরা নিয়ে এসেছি।

তিনি বলেন, মিলিটারি ডিক্টেটররা যখন একের পর এক ক্ষমতা দখল করে তখন তারা ভোট চুরির কালচার শুরু করেছিল। সেই জায়গা থেকে মানুষের ভোটের অধিকার তাদের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলন-সংগ্রাম আমরা শুরু করেছি। কাজেই জনগণকে তাদের ভোট সম্পর্কে সচেতন করা এবং ভোট যে তাদের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার সেটা সম্পর্কে আমরা সচেতন করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মানুষ প্রথম উপলব্ধি করেছে সরকার জনগণের সেবক। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি নিজেরা অফিসে তালা দেয়, আবার নিজেরাই ভাঙে। এ নিয়ে আবার গর্ববোধ করে যে, চাবি হারিয়েছে। চাবি গেল কোথায়? তালা তো তাদেরই দেয়া ছিল। তাদের চাবি খোয়া যাবে, চাবি হারাবে এবং তারা পথও হারাবে। তারা পথ হারানো পথিক হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, তাদের একটাই দক্ষতা আছে, অগ্নিসন্ত্রাস, বাসে আগুন, লঞ্চে- ট্রেনে আগুন দেয়া, রেলের লাইন খুলে দিয়ে, রেলের পাত খুলে ফেলে মানুষ হত্যা করা। মানুষ মারার ফাঁদ পাতায় তারা ওস্তাদ। তিনি আরও বলেন, এ নির্বাচনে বিজয় বাংলাদেশের জনগণের বিজয়। নির্বাচনে বিজয় গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতার বিজয়। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাওয়াই আমার লক্ষ্য। যেন জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি। অন্তত এটুকু বলতে পারি গত ১৫ বছর আমরা সরকারে আছি বলেই আজকে বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব নেই। চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি, বাংলাদেশের মানুষ এখন আরও উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখে। এ সময় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বিভিন্ন গণআন্দোলন এবং সর্বোপরি দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় প্রবাসে বসবাসরত বাঙালিদের বলিষ্ঠ ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন।

Comment here