আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে শিশুদের জন্য প্রমাণভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়নে সমর্থন প্রদানে বহুমাত্রিক শিশু দারিদ্র্য সূচক (সিএমপিআই)

 
 
ঢাকা, ২০ নভেম্বর ২০১৭: ইউনিসেফ ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে ‘বহুমাত্রিক দারিদ্র্য পরিমাপ পদ্ধতি’ চালু করেছে, যা শিশুদের জন্য প্রমাণভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়নে সমর্থন প্রদানে প্রচলিত ‘আয় দারিদ্র্যতা পদ্ধতি’র (ইনকাম পোভার্টি ম্যাথড) পরিপূরক।

 

শিশু দারিদ্র্য প্রায়ই আয়-ব্যয়ের লেন্সের ভেতর দিয়ে দেখা হয়, যা সবসময় যথাযথ নয়। কারণ এর বিভিন্ন কারণ ও প্রভাব রয়েছে। তথ্য-প্রমাণে আরও দেখা যায়,মাথাপিছু জিডিপি বেশি হওয়ার সঙ্গে শিশু দারিদ্র্যের মাত্রা কমার বিষয়টি সব সময় সরাসরি সম্পর্কিত নয়। একইভাবে মাথাপিছু কম জিডিপির সঙ্গে শিশু দারিদ্র্য বাড়ার বিষয়টিও সব সময় সম্পর্কিত নয়। উদাহরণস্বরূপ, অপুষ্টি স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা পরবর্তী সময়ে একটি শিশুর দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে,আয় বা ব্যয়ের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে দারিদ্র্য পরিমাপের প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে দৃষ্টি প্রসারিত করা এবং শিশু দারিদ্র্যের বহুমাত্রিক চরিত্র খোঁজার জন্য একটি পদ্ধতি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

এ বিষয়ে সবচেয়ে উন্নত ধারণার সমাবেশ ঘটাতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারের সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগ ও পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে যৌথভাবে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছে; যাতে বাংলাদেশের জন্য শিশুর বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (চাইল্ড মাল্টি-ডাইমেনশনাল পোভার্টি ইন্ডিকেটরস-সিএমপিআই)পরিমাপে গবেষণা প্রক্রিয়ার তথ্য ভাগাভাগি করা যায়।

 

এর লক্ষ্য হচ্ছে সিএমপিআইকে দাফতরিক দারিদ্র্য পরিসংখ্যান হিসবে চালু করা এবং একে ঘিরে একটি সাধারণ ধারণা গড়ে তোলা। ইউনিসেফ ও বাংলাদেশ সরকার সাম্প্রতিক সময়ে যে ছয়টি সমীক্ষা করছে এটি তারই একটি।

 

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ‘সিএমপিআই হচ্ছে বাংলাদেশের অগ্রগতি পরিমাপ করার জন্য একটি মানদণ্ড গড়ে তোলার প্রচেষ্টা, যে অগ্রগতি বছরের পর বছর ধরে অর্জন করেছে সরকার। এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী উদ্যোগ এবং কীভাবে বিভিন্ন নীতিমালা মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে তা মূল্যায়ন করতে এটি সরকারকে সহায়তা করবে; বিশেষ করে বাংলাদেশ যখন মধ্যম-আয়ের দেশ হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।‘ তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমরা বাংলাদেশে বহুমাত্রিক সব উপায়ে বিদ্যমান দারিদ্র্য, বিশেষ করে শিশু দারিদ্র্য মোকাবেলার জন্য সম্মিলিতভাবে সম্পৃক্ত হয়েছি, তাই আমি আশা করি পরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রণয়নে প্রতিবেদনটি দরকারি তথ্য দিয়ে অবদান রাখবে।‘

 

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) . শামসুল আলম, বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরোর মহাপরিচালক জনাব মো. আমির হোসেন, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, গবেষক ও উন্নয়ন সহযোগীরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

 

এই সমীক্ষা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ (এডিজিএস) অর্জনের অগ্রগতি পরিমাপে বাংলাদেশের সহায়ক হবে। এছাড়া এটি শিশুদের ওপর সামাজিক সুরক্ষার প্রভাব মূল্যায়নে সাহায্য করবে এবং বর্তমানে দারিদ্র্য মোকাবেলায় বাংলাদেশে পদক্ষেপসমূহের পরিপূরক হবে। একইসঙ্গে এটি সরকারি নীতিমালার জন্য বাড়তি তথ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসে পরিণত হবে।

 

 

 

 

 

Comment here