আন্তর্জাতিকজাতীয়সারাদেশ

বড় কর্মসূচির চিন্তা ইসলামী আন্দোলনের

ডেস্ক নিউজ:
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বাকি মাত্র কয়েক মাস। এখনো চূড়ান্ত হয়নি নির্বাচনী ব্যবস্থা। আওয়ামী লীগ সরকার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলে এলেও বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনড়। বিএনপি’র সঙ্গে যুগপতে না থাকলেও কঠোর আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আগামী মাসের প্রথম দিকে ঢাকায় বড় কর্মসূচির চিন্তা রয়েছে দলটি। এরই মধ্যে প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন কেউ কেউ। চূড়ান্ত আন্দোলনের লক্ষ্যে তৃণমূলে সম্মেলনের মধ্যদিয়েই শক্তির জানান দিচ্ছেন নেতারা। এখন সারা দেশের জেলা ও মহানগর পর্যায়ের সমাবেশ করছে দলটি। চলতি মাসেই ঢাকার বাইরে কর্মসূচি শেষে রাজধানীতে বড় সমাবেশ করতে চান শীর্ষ নেতারা। অনেকেই বলছেন- আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনী ব্যবস্থা চূড়ান্ত করতে সরকারকে বাধ্য করতে চাইছেন তারা।

সংসদ ভেঙে দিয়ে ‘জাতীয় সরকারের’- অধীনে নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশের পরিকল্পনাও রয়েছে। চলতি মাসের শেষদিকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার কথাও রয়েছে দলটির।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর শীর্ষনেতারা বলছেন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবেন না তারা। এই সরকারের অধীনে আগামীতেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এজন্য সংসদ ভেঙে দিয়ে ‘জাতীয় সরকারের’- অধীনে নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। দলটির দাবি, আগামী নির্বাচনের আগেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

নেতারা বলেন, বর্তমান সরকারের পরিবর্তন চায় ইসলামী আন্দোলন। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে সংকট দেখা দিয়েছে। বিগত সময়ে যেসব দল সরকারে ছিল তারা কেউই স্থায়ী নির্বাচনী ব্যবস্থায় পৌঁছাতে পারেনি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের পদত্যাগের পাশাপাশি ‘স্থায়ী নির্বাচনী ব্যবস্থা’- নিশ্চিত করতে চায়।

১৫ই জুলাই ঢাকায় এক সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, দেশের নিবন্ধিত অধিকাংশ রাজনৈতিক দল দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় না। সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতোই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। তবে এবার সেই সুযোগ দেয়া হবে না। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। বিতর্কিত ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (চজ) পদ্ধতির প্রবর্তন করতে হবে।

দলটি বলছে, বিরোধীদলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলেও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা ‘জাতীয় সরকার’র অধীনে নির্বাচন চায়। সেই ‘জাতীয় সরকারে’ নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতিনিধি থাকবেন। তার প্রধান হবেন আপিল বিভাগের বর্তমান কর্মরত একজন গ্রহণযোগ্য বিচারপতি। তাদের কেউ নির্বাচন করতে পারবেন না। বর্তমান মন্ত্রী-এমপিরাও জাতীয় সরকারের সদস্য হতে পারবেন না। এছাড়া তারা আসনভিত্তিক প্রার্থীর পরিবর্তে দলভিত্তিক ভোট চান। যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে তারা ততটি আসন পাবেন এ ধরনের একটি ফর্মুলারও বাস্তবায়ন চান তারা।

ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান মানবজমিনকে বলেন, আমরা সরকার বিরোধী আন্দোলনে আছি। আমাদের দাবি সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সরকার বিরোধী দলগুলোর মতো আমরাও একই দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। সারা দেশে তৃণমূলে ও জেলা পর্যায়ে সমাবেশ করছি। জেলা পর্যায়ের কর্মসূচি প্রায় শেষদিকে। সামনের দিনে ঢাকায় কর্মসূচি ঘোষণা হবে। ঢাকাকেন্দ্রিক আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে। আমাদের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি রয়েছে। সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরকার পতনের দাবিতে বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে না থাকলেও আমাদের দাবি একটাই। এই সরকার যদি আমাদের দাবি না মানে তাহলে সকল বিরোধী দলকে একটা ব্যবস্থার মধ্যে আসতে হবে। প্রয়োজনে ঐক্য হতে পারে। বেশির ভাগ দলই সরকারের পদত্যাগ চায়। এই দাবিতে বিএনপি’র সঙ্গে ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যোগাযোগ রয়েছে। সরকার যদি এ দাবি না মানে তাহলে গণঅভ্যুত্থান ঘটতে পারে। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে যে কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

Comment here