পর্যটন

বিদেশি শ্রমিকের মালয়েশিয়ায় কর দিতে হবে না

টেকনাফ ভিশন ডেস্ক:মালয়েশিয়ায় কর্মরত বিদেশী শ্রমিকদের মজুরি থেকে করের অর্থ কাটতে পারবেন না নিয়োগকর্তারা। সেইসঙ্গে শ্রমিকদের আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে দেশে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত যে কোন বিষয়ে দায় থাকবে মালিকপক্ষের।

পহেলা জানুয়ারি, রোববার থেকে দেশটিতে চালু হয়েছে এমপ্লয়ার ম্যান্ডেটরি কমিটমেন্ট (ইএমসি) নীতিমালা। এতে বিদেশি শ্রমিকদের বেশ কয়েকটি সুবিধা দিতে নিয়োগকর্তার বাধ্যবাধকতা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে।

ইএমসি অনুসারে, বিদেশি শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত বার্ষিক কর দিতে হবে নিয়োগকর্তাদের পকেট থেকে। এজন্য শ্রমিকদের মজুরি থেকে অর্থ কেটে রাখা যাবে না। শ্রমিকদের ন্যূনতম মান নিশ্চিত করতে নিয়োগকারীকেই উদ্যোগ নিতে হবে।

বিদেশি শ্রমিকদের কর দেয়ার ক্ষেত্রে ক্যাটাগরির সংখ্যা ছয়টি থেকে কমিয়ে দুটি করা হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে দেশটিতে নির্মাণ, ম্যানুফ্যাকচার ও সেবা খাতের বিদেশি শ্রমিকদের ১ হাজার ৮৫০ মালয়েশিয়ান রিংগিত বা ৩২ হাজার ৭১৩ টাকা এবং কৃষিসহ অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের ৬০০ রিংগিত বা ১০ হাজার ৬১০ টাকা কর দিতে হয়। এ অর্থ শ্রমিকদের মাসিক বেতন থেকে ধাপে ধাপে কেটে রাখতেন নিয়োগকারীরা।

দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. আহমেদ জাহিদ হামিদি বলেন, ‘ইএমসি এর কারণে শ্রমিকদের কল্যাণের সব দায়িত্ব থাকবে নিয়োগকর্তার। একইসঙ্গে সরকার একটি অঙ্গীকারনামা তৈরি করবে যাতে নিয়োগ কর্তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য উল্লেখ থাকবে। এর ফলে নিবন্ধিত (বৈধ) ৩০ লাখ বিদেশি শ্রমিক লাভবান হবেন।’ বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাদের জামানতের পরিমাণ বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানান।

সরকারি এ নীতির বিষয়ে দেশটির ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মালয়েশিয়ান বিজনেসম্যান অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ ইজাত আমির শিল্প ও নির্মাণ খাতের স্বার্থে এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে নতুন করে ভাবতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে মালয়েশিয়ান এগ্রিকালচার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ আওদং বলেন, ‘ইএমসি দেশের কৃষি খাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। আমাদের আরও বিদেশি শ্রমিক দরকার। আর তাদের দেখভালের বিষয়টিও আমাদের দায়িত্বের অংশ।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের শুরুতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক দেশটিতে অবস্থানকারী অনিবন্ধিত (অবৈধ) শ্রমিকদের বৈধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ ঘোষণার আলোকে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া মালয়েশিয়াতে অবস্থান করা ২ লাখ বাংলাদেশিকে বৈধতা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এ ছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে জি টু জি প্লাস পদ্ধতিতে পাঁচটি খাতে বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ কর্মী নিতে সমঝোতা স্মারকে সই করে মালয়েশিয়া। এ উদ্যোগের আওতায় শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে নির্মাণ, সেবা ও ম্যানুফ্যাকচার খাতে দেশটিতে শ্রমিক পাঠানো শুরু হবে।

২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫ বিদেশি শ্রমিক গেছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায়। এর মধ্যে ২ লাখ ৮২ হাজার ২৮৭ জন গেছেন বাংলাদেশ থেকে। তবে দেশটির সরকার মনে করে, এ সংখ্যার বাইরে আরও ১৭ লাখ অনিবন্ধিত বিদেশি শ্রমিক বর্তমানে দেশটিতে অবস্থান করছেন।

সূত্র: বণিক বার্তা

Comment here