কক্সবাজারক্রাইমজাতীয়টেকনাফসারাদেশ

উদ্ধার হয়িন অপহৃত টেকনাফে বন পাহারা দলের তিন সদস্য :২০ লাখ মুক্তিপণ দাবী….

মুহাম্মদ জুবাইর, টেকনাফ ::
টেকনাফে বনবিভাগের পাহারা দলের অপহৃত তিন সদস্য একিদন পরো উদ্ধার করা সম্ভব হয়িন।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে অপহরণকারীরা অপহৃত মো. শাকেরের মায়ের মুঠোফোনে কল দিয়ে ২০ লাখ টাকা ও অপহৃত মোহাম্মদ রহিমের বাড়িতে তার রেখে যাওয়া মুঠোফোনে কল দিয়ে একই অংক মুক্তিপন দাবী করেছে বলে জানা গেছে। অপর অপহৃত আবদুর রহমানের আত্মীয় স্বজনের কাছে এখনো মুক্তিপণ দাবী করেনি।
অপহৃত মো. শাকেরের বড় মো. আয়ুব জানান, সকালে মায়ের মুঠোফোনে দূর্বৃত্তরা ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। চাহিদাকৃত মুক্তিপণ না দিলে মেরে ফেলবে বলেও জানান। তাদেরকে প্রচুর শারিরীক নির্যাতন চালাচ্ছে। মুঠোফোনে সেই চিৎকার শুনানো হচ্ছে।
এদিকে এঘটমায় পুরো এলাকার বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন ও আতংকের মধ্যে রয়েছে।
উল্লেখ্য,গত শুক্রবার ন্যাচার পার্কের বনপাহারা দিতে গিয়ে তিন জনই নিখোঁজ হয়েছিল। তাদের খুঁজতে বনবিভাগ ও স্থানীয়রা বিকালে পাহাড়ে অভিযান চালায়।
নিখোঁজ তিনজন হলেন- টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়ার এলাকায় বাসিন্দা ও সিপিজি বনপাহারা দলের সদস্য আবদুল মালেকের পুত্র মোহাম্মদ শাকের (২৪),মৃত আবদুল শুক্কুরের পুত্র আব্দুর রহিম (৩৭) ও মৃত বকসু মিয়ার পুত্র আব্দুর রহমান (৩২)। তাঁরা তিনজনই বন পাহারা দলের সদস্য।
কোথাও খোঁজ খবর না পেয়ে রাতেই টেকনাফ মডেল থানায় আবদুল মালেক বাদী হয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
গত শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল আটটা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তারা উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনী বিটের নেচার পার্ক বনে পাহারা দেওয়ার কথা ছিল। পাহারা দিতে গিয়ে তিন জনের খোঁজ মেলেনি।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নেচারপার্ক মোচনী বন পাহারা দলের সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান।
নিখোঁজ তিনজনের পরিবার সূত্র জানায়, শুক্রবার সকালে বনপাহারা দেওয়ার জন্য মোহাম্মদ শাকের, আব্দুর রহিম ও আব্দুর রহমান তারা তিনজন বনের ভিতর ঢুকে। কিন্তু তারা বেলা ১১টার দিকে ফেরত আসার কথা থাকলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কোনো ধরনের খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি এবং তাদের হাতে থাকা মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এতে করে পরিবারের লোকজন আতঙ্কগ্ৰস্থ হয়ে পড়েছেন ।
অবশেষে শনিবার সকালে দূর্ব্ত্তরা মুঠোফোনে মুক্তিপণ দাবী করে। নইলে প্রাণে মেরে ফেলবে বলেও হুমকী দেন। এসময় তাদেরকে ব্যাপক শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে মুঠোফোনে চিৎকার শুনান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বনবিভাগের টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলার হ্নীলার মোচনী বিটের আওতাধীন বন পাহারা দলের সিপিজি ৩৭ জন সদস্য রয়েছেন। এ পাহারা দলের সদস্যরা দৈনিক সকাল ও বিকেল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বনে পাহারা দিয়ে আসছিলেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কোন ধরনের খোঁজ খবর না পেয়ে বনবিভাগের অপরাপর সদস্য ও বনকর্মীদের নিয়ে বিকেলে পাহাড়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জুবাইর সৈয়দ জানান- এব্যাপারে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেছে। পুলিশ তাদের উদ্ধারে কাজ করছে।
এদিকে স্থানীয় মেম্বার মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে শতাধিক স্থনীয় লোকজন ও বন পাহারা দেলর অর্ধ শতাধিক সদস্য পাহাড়ে অভিযান চালায়।
উল্লেখ্য যে, রোহিঙ্গাদের কয়েকটি দূর্বৃত্তদল স্বশস্ত্রভাবে পাহাড়ে অবস্থান করে প্রতিনিয়ত অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। মুক্তিপন না দিলে হত্যা করছে। গত ২৬ আগস্ট জাফর আলম নামে এক রাখালকে গুলি করে হত্যা করে এবং গত সোমবার নুরুল আবছার নামে এক যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ে ফিরে আসে।
দিন দিন রোহিঙ্গা এ দূর্বৃত্তরা রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পাহাড়ের তাদের আস্তানায় নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন চালায়। তাদের বিরুদ্ধে আইন শৃংখলা বাহিনীর সাঁড়াশী অভিযান চালানোর জন্য জোর দাবী জানান টেকনাফবাসী ও সচেতন মহল।

Comment here