আন্তর্জাতিককক্সবাজাররোহিঙ্গা সমাচার

মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলছে সংঘাত: ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশ রোধে সতর্ক বিজিবি

মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলছে সংঘাত:

ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশ রোধে সতর্ক বিজিবি

টেকনাফ ভিশন ডেস্ক:

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেদেশের জান্তা সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাত চলছে। দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ দীর্ঘস্হায়ী হওয়ায়
রাখাইন প্রদেশের সাধারণ জনগণ তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছে। পর্যাপ্ত খাবার ও জ্বালানি সংকটের কারনে অনেকে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার পথ খুঁজছে। ইতিমধ্যে টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্তে শতাধিক মিয়ানমার নাগরিক অনুপ্রবেশ করার অপেক্ষায় রয়েছে বলে একটি নির্ভরশীল সূত্র দাবী করেছে। এতে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এরই প্রেক্ষিতে সীমান্ত রক্ষী বিজিবি সীমান্তে সতর্কতা বাড়িয়েছে। এবং এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান, বিজিবিএম, বিএএম, এনডিসি, পিএসসি ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে দায়িত্বরত সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি সবাইকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন জানান বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ শরীফুল ইসলাম।৷
উখিয়ার পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন,২০১৭ সালে মিয়ানমার আরকান রাজ্য সংঘাতের কারনে এদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রেবেশ ঘটে।এরপর থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে উখিয়া- টেকনাফের আশ্রয় নেয়।তারা ক্যাম্পে আশ্রয়ের পর রোহিঙ্গাদের একটি গ্রুপ ক্যাম্পে শুরু করেন দেয় গোলাগুলি ও খুন, অপহরণ,মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি।
এ কারনে স্থানীয়রা এক ধরনে অনিরাপদের মধ্যে বসবাস করছে। এবারো মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেদেশের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলমান রয়েছে।এ কারনে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশের আশঙ্কা রয়েছে।সে সাথে বিদ্রোহীরাও ডুকে যেতে পারে।তবে আমরা স্থানীয়রা সহ বিজিবি’র সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছেন বলে তিনি জানায়।
টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের থেমে থেমে চলছে গোলাগুলি।এ গোলাগুলির শব্দে এপারের বাসিন্দের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
এ ঘটনায় শনিবার ২৭ জানুয়ারী উলুবনিয়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের বসতঘরে ওপার থেকে এসে একটি গুলি পড়ে,সে সাথে সীমান্তের পাশে চাষের জমিতে পড়লো মর্টারশেল। মঙ্গলবারেও শোনা গেছে ফায়ারের শব্দ এবং মঙ্গলবার দুপুরে দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপারে সীমান্তের কাছে ধোঁয়ার কুন্ডলী দেখা গেলো।

উলুবনিয়া জামান সখিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শ্রেনীর শিক্ষার্থী আফরোজা খানম রাহি বলেন, আমার বাড়ি উলুবনিয়া গ্রামের সীমান্তে কাছে,মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্তের কাছে গুলি’র শব্দ হলে ভয়ে স্কুলে যেতে পারিনা।পড়াশোনা করতে পারিনা।
এদিকে কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি’র) অধিনায়ক কর্নেল মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী গত ২৮ জানুয়ারী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি’র মাধ্যমে জানান সাম্প্রতিক মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মিয়ানমার আর্মি/বিজিপি এবং আরাকান আর্মি’র মধ্যকার চলমান সংঘর্ষের জের ধরে গত ২৭ জানুয়ারি মিয়ানমার হতে ফায়ারকৃত ১৩টি মর্টার শেল এবং ১ রাউন্ড বুলেট কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে।উক্ত ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিজিবি’র পক্ষ হতে তাৎক্ষণিক প্রতিপক্ষ বিজিপিকে প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করা হয়েছে।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি’র) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন,সীমান্তের ওপারে সংঘাত চলার কারনে রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশের আশঙ্কা থাকতে পারে।তবে সীমান্তে আমাদের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি রয়েছে।এখন পর্যন্ত কোন রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেনি।আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছেন বলে তিনি।

Comment here