ক্রাইমরোহিঙ্গা সমাচার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে র‌্যাব-১৫ “র অভিযান : আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র একান্ত সহকারী এবং অর্থ সমন্বয়ক মোহাম্মদ এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরী গ্রেফতার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে র‌্যাব-১৫ “র অভিযান :

আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র একান্ত সহকারী এবং অর্থ সমন্বয়ক মোহাম্মদ এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরী গ্রেফতার

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র একান্ত সহকারী এবং অর্থ সমন্বয়ক মোহাম্মদ এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরী (২৭) কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। ২ অক্টোবর সোমবার ভোর রাত দেড় টার সময়৷ উখিয়া কুতুপালং এলাকায় র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। সে বান্দরবান জেলার
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন
০২নং ওয়ার্ড তুমব্রু কোনারপাড়া জিরো লাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাব্বির আহমেদ” র ছেলে।
র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার অফিসের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া)
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালাম চৌধুরী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের তুমব্রু বাজার সংলগ্ন কোনারপাড়া গ্রামের তুমব্রু মধ্যম পাড়া মসজিদের দক্ষিণ পাশে ইটের রাস্তা এলাকায় মিয়ানমারের আরসা ও আল ইয়াকিন গ্রুপের বিচ্ছিন্নতাবাদী, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রধারী খুনি, ধর্ষক, ডাকাত, মাদক চোরাকারবারী ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাবের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। উক্ত অভিযানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা মুহুর্মুহু গুলিবর্ষন ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি আক্রমণের ফলে অভিযানে থাকা রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার স্কোয়াড্রন লীডার রিজওয়ান রুশদী নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং একই সাথে র‌্যাব সদস্য কনস্টেবল সোহেল বড়ুয়া’কে গুরুতর আহত করা হয়।

এই নৃশংস ঘটনা সংঘঠিত হওয়ার পর থেকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন কাজ করতে থাকে। সম্প্রতি র‌্যাব-১৫ এর গোয়েন্দা নজরদারী, তৎপরতা ও অনুসন্ধানের একপর্যায়ে বিশ্বস্ত সূত্রে র‌্যাব জানতে পারে,
স্কোয়াড্রন লীডার রিজওয়ান রুশদীর নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পলাতক এজাহারনামীয় আসামী নোমান চৌধুরী উখিয়া উপজেলার কুতুপালং এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২ অক্টোবর ভোর রাত দেড় টার সময় র‌্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল অভিযান
পরিচালনা করে মোহাম্মদ এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরী (২৭)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী গত ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এবং র‌্যাব-১৫ এর যৌথ অভিযানের সময় রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কক্সবাজার শাখার স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদি হত্যাকান্ড এবং র‌্যাবের কনস্টেবল সোহেল বড়ুয়া গুরুতর আহতের হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করে বলে অকপটে স্বীকার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী মোহাম্মদ এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরী স্বীকার করে যে, আমেরিকা প্রবাসী পিতার মাধ্যমে আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র সাথে তার পরিচয় হয়। আরসার হয়ে দীর্ঘদিন সক্রিয়ভাবে কাজ করার ফলস্বরূপ আতাউল্লাহ তাকে তার একান্ত সহকারী ও সার্বক্ষনিক অস্ত্রধারী বডিগার্ড হিসেবে নিয়োগ দেন । এছাড়াও হুন্ডির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আরসার জন্য প্রেরিত অর্থের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে এবং প্রাপ্ত অর্থ আরসা’র বিভিন্ন ক্যাম্প কমান্ডারদের মাঝে পৌঁছে দেয় বলে সে স্বীকার করে। সে আরসা’র জন্য ইউনিফরমের কাপড়, ঔষধ সামগ্রী, ওয়াকিটকি, ল্যান্ড মাইন এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি কেনা-কাটা করে বলে জানায়। আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার অন্যতম ব্যক্তি হিসেবে কাজ করে বলে সে জানায়। ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবরে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) এর মংডু অঞ্চলের সদর দপ্তরে হামলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে অস্ত্র লুট ও ১৪ জন জওয়ান হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিল বলে স্বীকার করে মোহাম্মদ এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরী।
এর আগেও র‌্যাব-১৫ সদস্যরা উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ (আরসা) এর শীর্ষ সন্ত্রাসী আসামী হাফেজ নুর মোহাম্মদ কে চলতি বছর ২১ জুলাই তারিখ এবং আসামী রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুছা কে ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আবু সালাম চৌধুরী।

Comment here