এক্সক্লুসিভকক্সবাজারজাতীয়টেকনাফসারাদেশ

লোডশেডিং প্রতিযোগিতায় অতিষ্ঠ টেকনাফে পল্লীবিদ্যুত গ্রাহক : উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা

মুহাম্মদ জুবাইর:
টেকনাফে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে গ্রাহকরা। নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ভোগান্তি। গত ২৪ ঘন্টায় সোমবার দিবাগত রাত ৯টা পর্যন্ত প্রায় ৯/১০ঘন্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে টেকনাফে পল্লী বিদ্যুতের। দিন দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লেও সংশ্লিষ্টরা প্রতিযোগিতা করছে লোডশেডিংয়ের। একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে কখন ফিরবে তার নেই নিশ্চয়তা। দিন-রাত ইচ্ছে মতো সময়ে অসময়ে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া এখন বিদ্যুৎ অফিসের নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিদ্যুতের এমন আচরণে রাতের বেলা একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না গ্রাহকরা। শিক্ষার্থীরা রাতের বেলা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না। ইফতারী, সেহেরী ও তারাবাহীতে প্রায় সময় বিদ্যুত থাকে না। বিদ্যুত থাকলেও বোল্টেজ নেই।বিদ্যুৎ নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে চরম স্থবিরতা। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ফ্রিজ, মোটর, কম্পিউটার, বাল্বসহ যান্ত্রিক ও ইলেকট্রিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। দিন-রাত যে কতবার বিদ্যুৎ আসে যায় তা হিসেব পাওয়া যায় না। বিদ্যুৎ এই আছে তো এই নেই। বিদ্যুতের এমন লুকোচুরি খেলা বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
স্থানীয়রা বলেছেন, সরকার শতাভাগ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছেন। একটি চক্র মূলত সরকারের বিরুদ্ধে মরণ খেলায় মেতেছে। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি দেশব্যাপী বিদ্যুতের সাব স্টেশনগুলোও আপগ্রেড করছে। কিন্তু সুফল পারচ্ছে না বিদ্যুতের বিতরণ কোম্পানিগুলোর দুর্নীতি, লুটপাট আর ষড়যন্ত্রের কারণে।
পৌরসভার বাসিন্দা ছৈয়দ হোছাইন, মো: হারুনসহ বেশকয়েকজন গ্রাহক জানান, বিদ্যুৎ চলে গেলে কখন আসবে তা কেউ জানে না। কখনও ১৫-২০ মিনিট আবার কখনও দু-চার ঘণ্টা পরে আসে বিদ্যুৎ। প্রায়দিন সন্ধ্যায় হলেই চলে যায় বিদ্যুৎ, আসে অনেক রাতে। স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিলে কখনও ব্যস্ত, কখনও বন্ধ বলে, মাঝে মধ্যে ফোন রিসিভ হলে তারা নানান অজুহাত দিতে থাকে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষই শুধু ভোগান্তির শিকার হয়। এর শেষ কোথায়? টেকনাফ জোনাল অফিস এর ডিজিএম আবুল বাশার আজাদ জানান, উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা ২৬ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১০-১৫ মেগাওয়াট। যার ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও জানান বিবিয়ানা সহ কয়েকটি গ্যাসফিল্ডে সমস্যার কারনে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। তাই দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তাছাড়া এই পবিত্র রমজান মাস ও গরমের কারনে স্বাভাবিক ভাবেই বাসাবাড়ি, দোকান, মসজিদ, টমটম গ্যারেজে, এবং সেচের পাম্পের লোড অনেক বেড়ে যায়। সেই সাথে অনেক বাসায় চুক্তি বদ্ধ লোডের বাইরে এসি, ফ্রিজ গুলো চালু থাকে যার কারনে অন্য সময়ের তুলনায় সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত লোড সর্বোচ্চ থাকে। সেক্ষেত্রে পিজিসিবি নিয়ন্ত্রনাধীন কক্সবাজার গ্রীডের টি-৩ ট্রান্সফরমার (যেখান থেকে আমরা বিদ্যুৎ নেই) ওভারলোডেড হয়ে যায়। তাই কিছু কিছু এলাকায় পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং করা হচ্ছে। গ্রাহকগনের মতই আমাদের জন্যও বিষয়টি কষ্টদায়ক। আশা করা যায় গ্যাসের সমস্যা সমাধান হলে এবং বৃষ্টি শুরু হলে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

Comment here